আরও দেখুন
সোমবারও EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের দরপতন অব্যাহত ছিল, এবং এই বিষয়টি উল্লেখ করা কিছুটা পুনরাবৃত্তিমূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ ইউরোর মূল্য ধারাবাহিকভাবে নিম্নমুখী হচ্ছে। এবার, এই পেয়ারের মূল্য 1.0195 লেভেলে পৌঁছেছে, যা আমরা $1.00–$1.02 এর টার্গেট রেঞ্জ হিসেবে পূর্বে প্রত্যাশা করেছিলাম। তবে, আমরা মনে করি না যে এটি ইউরোর দরপতনের সমাপ্তি চিহ্নিত করে, কারণ হায়ার টাইমফ্রেম এখনও দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করছে। যদিও এই ধরনের প্রবণতা শেষ পর্যন্ত শেষ হয়, বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের বিপরীতমুখী হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
সোমবার ইউরোজোন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা ইভেন্ট ছিল না। তবুও, এই বিষয়টি ট্রেডারদের ইউরো বিক্রি করা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। এটি আরও প্রমাণ করে যে স্থানীয় নয়, বরং বৈশ্বিক কারণগুলোই এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টকে প্রভাবিত করছে। ইউরোর দরপতনে ভূমিকা রাখা বৈশ্বিক কারণগুলো নিয়ে আমরা গত বছর থেকেই বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছি, এবং এখন পর্যন্ত কোনো বড় পরিবর্তন হয়নি। যদিও অস্থায়ী ভিত্তিতে ইউরোর মূল্যের কারেকশন হতে পারে, তবুও প্রশ্ন ওঠে যে এই ধরনের মুভমেন্ট যখন নিছকই কারেকশন বলে বিবেচিত হয়, তখন ইউরো কেনা কতটা কার্যকর হতে পারে। বিশেষ করে যখন পূর্ববর্তী কারেকশনগুলো দুর্বল ছিল।
5-মিনিটের চার্টে সোমবার 1.0195 লেভেলের কাছাকাছি বেশ কয়েকটি বাই সিগন্যাল দেখা গেছে। যদিও বাই সিগন্যাল গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তবে শক্তিশালী নিম্নমুখী প্রবণতার সময় লং পজিশন ওপেন করা সাধারণত বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এছাড়াও, এই সিগন্যাল যথেষ্ট অনিশ্চিত ছিল, তাই আমরা এগুলোকে উপেক্ষা করেছি। তবে, দ্বিতীয় লেভেলটি আপাতত ইউরোর দরপতন থামিয়েছে।
৩১ ডিসেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ কমিটমেন্ট অব ট্রেডার্স (COT) রিপোর্টে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশন এখন বুলিশ রয়েছে। তবে, সম্প্রতি বিয়ারিশ ট্রেডাররা আধিপত্য বিস্তার করেছে। দুই মাস আগে, প্রফেশনাল ট্রেডারদের শর্ট পজিশনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গিয়েছিল, যার ফলে দীর্ঘ সময় পর প্রথমবারের মতো নেট পজিশনের নেগেটিভ মান দেখা গিয়েছে। এই পরিবর্তন এই ইঙ্গিত দেয় যে ইউরো বেশি বিক্রি করা হচ্ছে এবং কম কেনা হচ্ছে।
আমরা এখনও ইউরোর দর বৃদ্ধির জন্য কোনো মৌলিক প্রভাবক চিহ্নিত করতে পারিনি। প্রযুক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে, EUR/USD পেয়ার দীর্ঘ সময় ধরে কনসোলিডেশন পর্যায়ে রয়েছে। সাপ্তাহিক টাইমফ্রেমে, ডিসেম্বর 2022 থেকে ইউরো 1.0448 এবং 1.1274 লেভেলের মধ্যে ট্রেড করেছে। 1.0448 লেভেল ব্রেকের ফলে আরও দরপতনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এছাড়াও, COT রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে লাল এবং নীল লাইন একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা মার্কেটে বিয়ারিশ প্রবণতা নির্দেশ করে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 9,300 বৃদ্ধি পেয়েছে, যখন শর্ট পজিশনের সংখ্যা 10,400 বেড়েছে, যার ফলে নেট পজিশনের সংখ্যা 1,100 হ্রাস পেয়েছে।
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, এই কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান নিম্নমুখী প্রবণতা পুনরায় শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি যে মধ্য-মেয়াদে এই পেয়ারের দরপতন অব্যাহত থাকবে। ফেডারেল রিজার্ভ 2025 সালে মাত্র ১ থেকে ২ বার সুদের হার কমাতে পারে, যা ট্রেডারদের প্রত্যাশার তুলনায় আরও অধিক হকিশ বা কঠোর অবস্থান নির্দেশ করে। তাই, ইউরোর মূল্যের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির জন্য কোনো যৌক্তিক কারণ আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ইচিমোকু সূচক লাইনের নিচে এই পেয়ারের ট্রেড করা হচ্ছে, যা স্বল্পমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের বিয়ারিশ প্রবণতার সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
১৪ জানুয়ারির জন্য, আমরা নিম্নলিখিত ট্রেডিং লেভেলগুলোর দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি: 1.0195, 1.0269, 1.0340–1.0366, 1.0461, 1.0524, 1.0585, 1.0658–1.0669, 1.0757, 1.0797, 1.0843, এবং 1.0889। এছাড়াও, সেনকৌ স্প্যান বি লাইন (1.0342), এবং কিজুন-সেন (1.0307) পর্যবেক্ষণ করুন। মনে রাখবেন যে ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, যা ট্রেডিং সিগন্যাল সনাক্ত করার সময় বিবেচনা করা উচিত। সিগন্যালটি ভুল প্রমাণিত হলে সম্ভাব্য লোকসানের হাত থেকে সুরক্ষা পেতে এই পেয়ারের মূল্য নির্ধারিত দিকে 20 পিপস মুভমেন্টের পর ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন।
মঙ্গলবারের একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হল যুক্তরাষ্ট্রে প্রোডিউসার প্রাইস ইনডেক্স বা উৎপাদক মূল্য সূচকের (PPI) প্রকাশনা; তবে, আমরা এই প্রতিবেদনাকে তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করি। সপ্তাহের শেষভাগে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, যা বিশেষ মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য। এই প্রতিবেদনটি ফেডের 2025 সালের সুদের হার হ্রাসের ক্ষেত্রে আরও ডোভিশ বা নমনীয় অবস্থান গ্রহণের প্রত্যাশা তৈরি করতে পারে, যা ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থামিয়ে দিতে পারে।