আরও দেখুন
ফ্ল্যাগশিপ ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন এখনো অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে রয়েছে এবং শক্তিশালী কোনো সাপোর্ট লেভেলে পৌঁছাতে পারছে না। বর্তমানে বিটকয়েনের মূল্যের উল্লেখযোগ্য অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে এবং চলতি সপ্তাহে দরপতনের শিকার হয়েছে। তা সত্ত্বেও, বিশ্লেষকেরা এখনও আশাবাদী এবং ধীরে ধীরে এই ডিজিটাল অ্যাসেটের পুনরুদ্ধারের আশা করছেন।
বুধবার, ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায়, ইকুইটি ও কমোডিটি মার্কেটজুড়ে ব্যাপক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে—যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৯০ দিনের জন্য পূর্বঘোষিত শুল্ক বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে।
এক পর্যায়ে, S&P 500 সূচকের প্রতিটি স্টকই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে লেনদেন করছিল। সূচকটি 8.3% বৃদ্ধি পায়, যেখানে মাত্র ২০টি কম্পোনেন্ট নেতিবাচক টেরিটরিতে থাকা অবস্থায় লেনদেন শেষ হয়। এদিন সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি হয় এয়ারলাইন্সগুলোর শেয়ারের (ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ডেল্টা এয়ার লাইন্স) এবং সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলোর মধ্যে (মাইক্রোচিপ টেকনোলজি, অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস, এবং ওএন সেমিকন্ডাক্টর কর্পোরেশন)।
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস খুব শিগগিরই তাদের বেশিরভাগ মিত্র দেশের সঙ্গে নতুন শুল্ক চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে। ইতোমধ্যে ৭০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে আলোচনার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে—যারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন ডলার সূচক (DXY) 102-পয়েন্ট সাপোর্ট লেভেল থেকে রিবাউন্ড করেছে, যা চলতি মাসের শুরুতে সক্রিয়ভাবে টেস্ট করা হচ্ছিল। সূচকটি মঙ্গলবারের পুরো ক্ষতি পুষিয়ে নিয়ে আবারও 103 পয়েন্টে ফিরে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ট্রেজারির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন—যেগুলো তারা আগেই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় সুরক্ষার জন্য কিনেছিলেন। ক্রিপ্টো বিশ্লেষক ক্রিস বিচ্যাম্প মন্তব্য করেন, "বাই-দ্য-ডিপ প্রবৃত্তি এখনো অত্যন্ত শক্তিশালী। সাম্প্রতিককালে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর স্টক বিক্রির প্রবণতা মার্কেটে স্টকের মূল্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।"
চীন নামক এক দ্বীপ
সপ্তাহের শেষ দিকে, ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেন যে গত সপ্তাহে আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হবে। সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ভিয়েতনামের ওপর (46%), শ্রীলঙ্কার ওপর (44%), এবং কম্বোডিয়ার ওপর (49%)। তবে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেনি, তাদের ক্ষেত্রে এই ৯০ দিনের জন্য মাত্র 10% হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। কিন্তু চীনের ক্ষেত্রে চিত্রটা ভিন্ন—চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে 125% করা হয়েছে। এর কারণ? বেইজিংয়ের পাল্টা প্রতিক্রিয়া। বুধবার, ৯ এপ্রিল চীনের কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক 34% থেকে বাড়িয়ে 84% করে।
প্রাইস ফিউচারস গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক ফিল ফ্লিন মন্তব্য করেন, "আমরা এখন সেই মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুরু করা বাণিজ্যযুদ্ধ এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। যারা শুল্ক তুলে নেওয়া নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী, তাদের এখন চুক্তির পথ খোঁজার জন্য কিছুটা সময় দেওয়া হলো।" তিনি আরও বলেন, "ট্রাম্প চীনকে এক অর্থনৈতিক দ্বীপে রূপান্তরিত করেছেন—বাকি বিশ্বের থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন।" নিঃসন্দেহে এটি একদমই শক্তিশালী একট উপমা!
এই প্রেক্ষাপটে, "ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন"—যুক্তরাষ্ট্রের বাজার মূলধনের দিক থেকে শীর্ষ সাতটি কোম্পানির সম্মিলিত বাজার মূলধন একদিনেই $1 ট্রিলিয়নের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই গ্রুপে টেক জায়ান্টদের আধিপত্য থাকায়, নাসডাক সূচক 10%-এর বেশি বেড়েছে, যা S&P 500 সূচককেও ছাড়িয়ে যায়। এবং এখানেই শেষ নয়—এই ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট আরও চলমান থাকতে পারে।
বিশ্বজুড়ে অস্থিরতার ফলে ক্রিপ্টো মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে
একই সময়ে, বৈশ্বিক ক্রিপ্টো মার্কেটও ব্যাপক বিক্রির প্রবণতা দেখা যায়। সোমবার, ৭ এপ্রিল বিটকয়েন দরপতনের শিকার হয়ে $74,500-এ পৌঁছায়—যা বৈশ্বিক ফিনান্সিয়াল মার্কেটে একপ্রকার ঝড় বইয়ে দেয়। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও, পূর্ণ পুনরুদ্ধার এখনও বহু দূরে।
মার্কেটের বিয়ারিশ প্রবণতা আরও গভীর হয় যখন BTC-এর মূল্য সপ্তাহের শুরুতে আবারও $78,600 লেভেলের নিচে নামে। বর্তমানে মূল্য একপ্রকার শূন্যতার মধ্যে ভাসছে—না উল্লেখযোগ্যভাবে রিবাউন্ড করছে, না কোনো শক্তিশালী বটম গড়ছে, ফলে দিকনির্দেশনা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকেরা সন্দিহান—ক্রেতারা কি মূল্যকে বর্তমান লেভেল ধরে রাখতে পারবে?
টেকনিক্যাল দিক থেকে, স্বল্পমেয়াদে বুলিশ মুভমেন্টের কিছুটা আশা দেখা যাচ্ছে। $75,100 থেকে $80,000 এর মধ্যবর্তী রেঞ্জটি সম্ভাব্য রিবাউন্ড জোন হতে পারে। তবে এই ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম মোটেই যথেষ্ট শক্তিশালী নয়, যা দীর্ঘমেয়াদি নিম্নমুখী প্রবণতা বদলে দিতে পারে।
বিটকয়েন $80,000 এর নিচে নেমে গেছে: এটি কি কনসোলিডেশন না আরেক দফা দরপতন?
৯ এপ্রিল বিটকয়েনের মূল্য $84,000 এর ওপরে উঠে যায়, ট্রাম্পের অপ্রত্যাশিত বৈশ্বিক শুল্ক বিরতির ঘোষণার পর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই 8% এর বেশি বৃদ্ধি পায়। এই ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টটি সাম্প্রতিক ব্ল্যাকরক সিইও ল্যারি ফিঙ্কের পূর্বাভাসকে সমর্থন করে, যেখানে তিনি বলেছিলেন—বর্ধিত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদি ক্রিপ্টো বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে।
তবে এই বুলিশ মুভমেন্ট সত্ত্বেও, বিটকয়েনের মূল্য $88,800 লেভেলে গিয়ে প্রবল রেজিস্ট্যান্সের মুখোমুখি হয়—এটি ২ এপ্রিলের সেই সর্বোচ্চ লেভেল, যেদিন প্রাথমিক শুল্ক সংক্রান্ত খবর সামনে আসে। কেল্টনার চ্যানেলের ঊর্ধ্ব সীমা বর্তমানে $88,130 এর কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচিত।
বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, বিটকয়েনের মূল্যের কারেকশনের সময় যারা মার্কেটে এন্ট্রি করেছিলেন, তারা এখন ব্রেকইভেন লেভেলের কাছাকাছি এসে প্রফিট নিতে শুরু করতে পারেন, যার ফলে একটি সম্ভাব্য "সেলিং ওয়াল" গঠিত হতে পারে। যদি বিটকয়েনের মূল্য এই রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে $100,000 এর সাইকোলজিক্যাল লক্ষ্যমাত্রার দিকে যাওয়ার পথ আপাতত বন্ধই রয়ে যাবে।
কেল্টনার চ্যানেলের নিচের সীমা—বর্তমানে $73,500-এ রয়েছে—যা একটি শক্তিশালী সাপোর্ট হিসেবে কাজ করছে এবং এটি সাম্প্রতিক কনসোলিডেশন পর্যায়ে গঠিত লিকুইডিটি জোনের সঙ্গে মিলে যায়। যদি বিটকয়েনের মূল্য $80,000 এর নিচে নেমে যায় এবং এটি বিক্রির প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়, তাহলে দরপতনের গতি ত্বরান্বিত হতে পারে।
ট্রাম্পের শুল্ক পরিবর্তনের ঘোষণায় BTC-এর মূল্যের $84,000 পর্যন্ত ব্রেকআউট
১০ এপ্রিল বিটকয়েনের মূল্য 12% বৃদ্ধি পায় যখন ট্রাম্প তার আগ্রাসী বাণিজ্য নীতিতে নাটকীয় পরিবর্তন আনেন, যেখানে চীন ব্যতীত অন্যান্য দেশের উপর পূর্বঘোষিত কঠোর শুল্কের পরিবর্তে নির্দিষ্ট 10% হার নির্ধারণ করা হয়। এই নীতিগত পরিবর্তন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পূর্ণমাত্রার বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের ভয় অনেকটা কমিয়ে দেয়।
ক্রিপ্টো মার্কেট দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। BTC-এর মূল্য $74,700 এর লেভেল থেকে লাফিয়ে উঠে $83,600 পর্যন্ত পৌঁছে যায়—মার্চ 2025 এর পর এটিই বিটকয়েনের দৈনিক সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। ইথেরিয়াম, XRP, কার্ডানো, সোলানা ও ডজকয়েনসহ প্রধান অল্টকয়েনগুলোর দামও দ্বিগুণ অঙ্কের হারে বেড়ে যায়।
১০ এপ্রিল BTC-এর মূল্যের 10% রিবাউন্ড ঘটে ব্ল্যাকরক সিইও ল্যারি ফিঙ্কের এক মন্তব্যের সময়, যেখানে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী শুল্ক কার্যকর হলে তা সর্বোচ্চ 20% পর্যন্ত একটি বৈশ্বিক মার্কেট কারেকশন সৃষ্টি করতে পারে। তবে তিনি একে "একটি অসাধারণ ক্রয়ের সুযোগ" বলে অভিহিত করেন এবং বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় হতে উৎসাহিত করেন। ফিঙ্ক বলেন, "আমি এটিকে বিক্রির চেয়ে ক্রয়ের সুযোগ হিসেবে বেশি দেখছি"—এবং তিনি বিটকয়েনের স্বল্পমেয়াদি পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদও প্রকাশ করেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ শুল্ক পরিবর্তন ফিঙ্কের সেই বক্তব্যকে আরও শক্তিশালী করে, যে বাণিজ্যযুদ্ধের এই বিশৃঙ্খলা অভিজ্ঞ ট্রেডারদের জন্য স্বল্প মূল্যে লাভ করার এক সুযোগ হতে পারে। যদিও এখনও কিছু বিয়ারিশ প্রবণতার ঝুঁকি রয়ে গেছে, মার্কেটের অনেক ট্রেডার এই পরিস্থিতিকে মার্কেটে পুনরায় এন্ট্রির জন্য একটি সবুজ সংকেত হিসেবে দেখেছে—এবং বর্তমান অনিশ্চয়তাকে তাদের পক্ষে কাজে লাগাতে শুরু করেছে।
Your IP address shows that you are currently located in the USA. If you are a resident of the United States, you are prohibited from using the services of InstaFintech Group including online trading, online transfers, deposit/withdrawal of funds, etc.
If you think you are seeing this message by mistake and your location is not the US, kindly proceed to the website. Otherwise, you must leave the website in order to comply with government restrictions.
Why does your IP address show your location as the USA?
Please confirm whether you are a US resident or not by clicking the relevant button below. If you choose the wrong option, being a US resident, you will not be able to open an account with InstaTrade anyway.
We are sorry for any inconvenience caused by this message.